Mostafizur Rahman is a professional content writer at CrawlText, specializing in SEO articles, blog posts, and web copy that drive engagement and conversions. With experience crafting clear, audience-focused content for almost all the niches, he delivers well-researched, optimized pieces on deadline. He combines editorial rigor with keyword strategy to boost traffic, authority, and reader retention across blogs, platforms, and newsletters.
মানুষই শ্রেষ্ঠ স্মৃতি হন্তারক
মানুষ কীভাবে এত স্মৃতি ভোলা হয় !
কী করে ভুলে যায়
ফেলে আসা দিন, স্মৃতির জরিন
মায়া শৈশব, চাঁদ উৎসব…
মানুষ কী করে ভুলে যায়
শিশির ভেজানো পায়ে হেঁটে যাওয়া মেঠোপথ
মানুষ কী করে ভুলে যায়
সুগন্ধি বকুল বৃক্ষ চুইয়ে পরা জোৎস্নার শপথ
মানুষ কী করে ভুলে যায়
কাঠাল পাতায় লেপ্টে থাকা বালকবেলার ঘ্রাণ
মানুষ কী করে ভুলে যায়
বিরহী রোদ্দুর শেষে চাতকি বৃষ্টির আলোয়ান
মানুষ কী করে ভুলে যায়
তেপান্তরে গত হওয়া সফেদ প্রিয় মুখ
মানুষ কী করে ভুলে যায়
কৈশোর দিনলিপি বিচ্ছেদী নীল সুখ
তবে মানুষই শ্রেষ্ঠ স্মৃতি হন্তারক
ভুলে যায় অপূর্ব মায়ামাখা মায়ের আঁচল, আঁতুড়ঘর
ভুলে যায় বিস্ময়ের চোখ খুলে দেওয়া প্রথম শিক্ষকের গমগমে কণ্ঠ
ভুলে যায় বিপদের বিপরীতে নসিবে পাওয়া উপকারী প্রশান্ত হাত
ভুলে যায় কম্পমান অধর ফুঁড়ে উচ্চারিত প্রথম প্রেমের সুতীব্র চিৎকার
তবে মানুষই শ্রেষ্ঠ স্মৃতি ঘাতক
ছিঁড়ে ফেলে বিশ্বাসের তুলতুলে মখমল
ছিঁড়ে ফেলে কৃতজ্ঞতার প্রশান্তিময় সবুজ চাদর
ছিঁড়ে ফেলে বুকের অলিন্দে পোষা শুভ্র পায়রার ডানা
ছিঁড়ে ফেলে ঐতিহ্যের অশ্বধ্বনি ঈশা খাঁ’র নসিহতনামা
আমি খুব করে চেয়েছিলাম
আমার বুকের ভেতর স্মৃতির আর্কাইভে কেবলই থাকবে তোমার জলরঙ
আমি খুব করে চেয়েছিলাম
অভিজ্ঞ সবুজ বটের মতো বদান্যতায় তোমার প্রতি নতজানুর চিহ্ন রাখতে
আমি খুব করে চেয়েছিলাম
শেষ বিকেলের প্রান্তরে উড়ে যাওয়া শালিকের ঠোঁটের আহার হতে
আমি খুব করে চেয়েছিলাম
কাঁদাখোচা পাখির মতো মাটির গভীর থেকে তুলে আনতে শৌর্যের টান
কিন্তু আজ আমি নি:সঙ্গ এক ঈগল
স্মৃতি হন্তারক নাগরিক ভূঁইফোড় কালের পুতুল
আমার সঞ্চয়ী হিসাবে কোন স্মৃতি জমা নেই
স্মৃতির জাদুঘরে কেবলই ক্লান্তির রোদ
আমি আসলে দিনশেষে কর্পোরেট মৃত ঘোড়া
আমার পায়ে নেই কালবোশেখের জোর
কণ্ঠে নেই মুস্তাফা জামান আব্বাসীর মতো দুধমাখানো সুর
এভাবে নীল হতে হতে পেরিয়ে এসেছি অনেক বছর
আমি এখন গহীন আমাবশ্যার ভেতর দিয়ে হাঁটছি
আমার চারপাশে কেবল মুদ্রার ঝনঝনানি
কেউ আমার অপেক্ষায় নেই; না স্মৃতি না বিরহ
না কেউ নেই, সবাই চলে গেছে যার যার অনিবার্য গন্তব্যে
সবাই ইয়া নাফসি ইয়া নাফসি করতে করতে বিস্মৃত হয়েছে অতলে অন্ধকারে
আমি আশায় ছিলাম কেবল আমার মায়ের
ভেবেছিলাম সবুজ আঁচল বিছিয়ে তিনি অপেক্ষা করবেন
যার স্মৃতির সুরভি আমার চোখে সুরমা হয়ে থাকতো
যার ডাক হিজলের বনে ঝুলে থাকতো ডাহুক হয়ে
কিন্তু কই ? আমি এখন ঘ্রাণ ও কানের বধিরতায় অসুস্থ
হঠাৎ
অন্ধকারেই কর্পোরেট মুদ্রার ঝংকার ও নাগরিক হলাহল পেরিয়ে
কী এক অদ্ভুত বিদঘুটে আহ্বানে আমার পিলে চমকে যায় !
কে তুমি ? এখানে কে ? কে ডাকে আমায় ? কেউ কি আমার অপেক্ষায় আছেন ?
হ্যাঁ, আছি
হ্যাঁ, আমার নাম মৃত্যু
হ্যাঁ, মৃত্যু ছাড়া এখন আর তোমার অপেক্ষায় কেউ নেই !
আমাকে ঢাকায় প্রথম চাকুরি দিয়েছিলেন একজন ফেরেশতা
[আপনার জীবনেও যিনি প্রথম চাকুরির ব্যবস্থা করেছিলেন, তাঁর প্রতি আপনিও নিজস্ব পন্থায় কৃতজ্ঞতা জানাতে পারেন]
ঠিক এই মুহূর্তে দিগন্ত বিস্তৃত খোলা মাঠে আমি উবু হয়ে আছি
প্রথম শ্রাবণের ঝুম সবুজবৃষ্টি আমাকে শুদ্ধ করছে
অদ্ভুত বিরহে নীল হয়ে যাচ্ছে আমার কপোল, ঠোঁট ও চিবুক
আমার পরিবেশ-প্রতিবেশে সহস্র মাইল দূরত্বেও কেউ নেই
আমার জোড়াকরতল আসমান বরাবর
আজ আমি ভীষণরকম কাঁদছি
ডাহুকের মতো অস্থির হয়ে কাঁদছি
কেঁদে কেঁদে তাজমহলের মার্বেল পাথরের মতো ভিজে যাচ্ছি
যেন পিতা হারাবার প্রচণ্ড শোক আমার পীঠে চাবুক মারছে
আমি একজন মানুষচেহারাওয়ালা ফেরেশতার জন্য কাঁদছি ।
হঠাৎ একদিন এই নাগরিক কবিয়াল আমার ক্যাম্পাসে হাজির
তাঁকে ঘিরে আবেগী তারুণ্যের বিপুল উচ্ছ্বাস !
কিন্তু কী অদ্ভুত দেখুন, সবাই খুঁজছেন তাকে
আর তিনি খুঁজলেন আমাকে…
শহরের শীতাতপ কক্ষ ছেড়ে তিনি হলে থাকবেন বলে গো ধরলেন
হলে সাত টাকায় পাওয়া ভাত খাবেন ডাল খাবেন ডিম খাবেন
আমি তো অগত্যা !
তাঁর কথাই শিরোধার্য, তিনি তো আমার পরম অগ্রজ…
একবার আমার সুরসিম্ফনীতে মুগ্ধ হলো পল্টন
চিলের মতো ছোঁ মারলেন তিনি
তুলে নিলেন ত্রিচক্রযানে
হ্যাঁ, সত্যি বলছি, আমি অর্থকষ্টে ভুগিনি কখনো
তবুও তখনো আমি চিনতাম না রূপচাঁদা মাছের নরম শরীর
বললেন, তোমার মধ্যাহ্নভোজে আজ আমার সারপ্রাইজ !
ওইবার প্রথম তিনি রূপচাঁদা মাছের সুঘ্রাণ আমার নাকে ছড়ালেন ।
এরপর পেরিয়ে গেছে বহুদিন, স্মৃতিগুলো স্বর্ণখচিত জরিন
আমার বয়স তখন ‘বিপ্লবী ২৩’ এর ঘরে বিহঙ্গের মতো ডানাওয়ালা
আমার বিশ্ববিদ্যালয়পাঠ প্রায় চুক্তি শেষের পথে
মতিহার চত্বরে তখন আমি অদ্ভুত তিন চোখা একজন মানুষ
একটা ফোন এলো ঘাসের উপর শিশির ঝরা এক বিকালে
: মানিক, তুমি ঢাকায় চলে এসো, তোমার জন্য একটা চাকুরির চাঁদ উঠিয়েছি আমি ।
: কী বলেন !
: সত্যি বলছি !
: সব কিছু প্রস্তুত । তোমার জন্য নকশাদার চেয়ার, কাঠের টেবিল এবং দায়িত্বের নসিহতনামা । প্রতি মাসে ছ’ হাজার দেবো, ছ’ মাস পর বাড়াবো দ্বিগুণ ।
প্রথম প্রেমও এতটা মধুময় হয়না, যতটা হলো এই ফোনালাপে
আমি অবাক-বিস্মিত-নামহীন অনুভূতি আমার বুকের তলে
মফস্বল মতিহারের স্বপ্ন ফেরি করা এক তরুণের বুকে
বৃষ্টির আঁচের মতো বারান্দা খোলা দখিনের শান্ত বাতাস বিলি কেটে গেলো
সূর্য ততক্ষণে হেলে পড়েছে, অন্ধকারে আমি কাঁদছি !
ঢাকায় আমার অফিস শুরু হলো ৫/৫ গজনভী সরণীতে
প্রত্যাশা প্রাঙ্গন নামের অফিসের গলিঘুপচিতে কেবলই স্বপ্নের মিঠাই
মানুষচেহারাওয়ালা ফেরেশতার সামনে যখন বসতাম
তিনি বয়সী বটবৃক্ষের মতো জ্ঞানবৃষ্টি ঢালতেন
তিনি আমার বুকের মানচিত্রে অদৃশ্যে এঁকে দিতেন বিপ্লব
তিনি কথার যাদুতে নিয়ে যেতেন নতুন দিনের স্বপ্নরাজ্যে
তিনি আমাকে বলতেন, আমি তোমার সাংস্কৃতিক পিতা
তিনি আমাকে নির্দেশ দিতেন বৈরী বাতাসে লাগাম টানতে
তিনি আমাকে প্রাণিত করতেন ভাঙা মাস্তুলে প্রলয় হানতে
তিনি বলতেন, অনাবাদী মাঠে জাগাও সবুজ
তিনি বলতেন, হাত পাতো ধরো সাম্যসুরুজ
আমি তাকে ভালোবাসতাম চক্ষুহীন মানুষের মতো
কিন্তু আমার চক্ষে তখন টিভি পর্দায় সোনা দিন আনার প্রবল ঝোঁক
আমি তাঁর প্রত্যাশা প্রাঙ্গন ছেড়ে পা বাড়ালাম অন্যরকম এক ছায়াজগতে…
আহ্, সেদিন থেকে তাঁর ভালোবাসা হারালাম
তিনি প্রচণ্ড অভিমান করলেন
মুখোমুখি কথা ও সাক্ষাতে তালা ঝুলালেন ।
ঠিক এক বছর পর তিনিই ফোন দিলেন
: দ্যাখো মানিক, তোমার উপর ভর করেছিল আমার স্বপ্ন, ভেবেছিলাম তুমি আব্বাসউদ্দীন হবে ! না, তুমি হয়ে গেলে প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ !
কিন্তু সেই ভালোবাসা আর জোড়া লাগেনি দু’জনের…
চোখের আড়াল থেকেই বাড়ছিলো দূরত্বের দৈর্ঘ্য ও ব্যাস
হাসপাতালের শেষ শয্যায় আমি আর মুখোমুখি গানের পাখি
বেহেশতি নকশার পোশাক তাঁর সামনে তুলে ধরে আমি কেঁদেছিলাম !
প্রিয় অগ্রজ প্রিয় পিতা, আমি আপনার জন্য কিছুই করতে পারলাম না !
কত দিন কত প্রহর এই স্বার্থান্ধ শহরে হুডখোলা রিক্সায় ঘুরেছি
কিন্তু তাঁর মতো ভালোবাসার মানুষ একটাও পাইনি !
আজ আমি আবার কাঁদছি হু হু করে কাঁদছি
বৃষ্টির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে কাঁদছি
আজ আমার অনেক সম্বল
কিন্তু অ্যাকাউন্টে নেই কেবল তাঁর ভালোবাসার মুখ…
সত্যি, তিনি মানুষ নন, মানুষের মুখওয়ালা ফেরেশতা
তিনি আমাকে ঢাকা শহরে প্রথম চাকুরির চাঁদ দিয়েছিলেন
আজ আমি আল্লাহ’র কাছে প্রাণ ভরে কান্নার সুগন্ধি পৌঁছাতে চাই
হে মাবুদ, তাঁর রূহকে তুমি শুভ্র পায়রা বানাও…
তোমার প্রশান্ত ছায়াতলে আশ্রয়ই হোক কেবল তাঁর রূহের গন্তব্য
আমার আর বাড়ি ফেরা হলো না…
সেই কবেকার কথা!
এসএসসি পাশ করে সেই যে গাঁয়ের বাড়ি থেকে বের হলাম
কিন্তু থিতু হয়ে আর ফেরাই হলোনা !
কী এক যান্ত্রিক জীবন ! আন্ত:নগর ট্রেনও এর চেয়ে কম ব্যস্ত
ঘর হতে বের হয়ে যাওয়া সৃজনচিন্তায় অস্থির এক কিশোর
আস্তে আস্তে যুবক, যুবক থেকে পরিণত বয়সের
তবুও ফেরাই হলোনা…
ঘর হতে বের হয়ে শহরের কলেজের ছাত্রাবাসে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজধানীর মেসে, এই মহল্লা সেই মহল্লা পেরিয়ে এলাম বেইলি রোডে
কিন্তু আমার সেই প্রিয় গাঁয়ের বাড়িতে আর ফেরাই হলোনা।
আমার, আমাদের আর ছুটি মিললো না
এখন যখন গাঁয়ের বাড়ি যাই
ব্যস্ততা শার্টের কলার চেপে ধরে বলে, হয়েছে-এবার শহরে চলো!
বাবা-মা যখন রাজধানীতে দিনযাপনের জন্য আসেন
দু’দিন যেতেই ব্যস্ততা তাদেরকেও তাড়া দেয়
এবার যেতে হবে, গাছের কলা বোধহয় পেকে গেছে
দেয়াল টপকে কেউ ঘরে ঢুকলো কি না!
এইসব চিন্তায় বাবা-মায়েরও ঘুম হারাম…
মাঝে মাঝে ভাবি…
আহা! আমাদের আর থিতু হয়ে একসঙ্গে ঘরে ফেরা হলোনা
আমাদের আর স্থায়ী ছুটি মিললো না!
তবে ছুটি একদিন হবেই
গাঁয়েও ফেরা হবে
থিতুও হবো
যেদিন হৃদস্পন্দন অচল হবে
আত্মাপাখি শরীরের খাঁচা মুক্ত হবে
জানি কেবল সেদিনই আমার, আমাদের, আপনাদের স্থায়ী ছুটি হবে!
আরও পড়ুন- সাদাত হোসাইনের অণুকবিতা

Mostafizur Rahman is a professional content writer at CrawlText, specializing in SEO articles, blog posts, and web copy that drive engagement and conversions. With experience crafting clear, audience-focused content for almost all the niches, he delivers well-researched, optimized pieces on deadline. He combines editorial rigor with keyword strategy to boost traffic, authority, and reader retention across blogs, platforms, and newsletters.
