Mostafizur Rahman is a professional content writer at CrawlText, specializing in SEO articles, blog posts, and web copy that drive engagement and conversions. With experience crafting clear, audience-focused content for almost all the niches, he delivers well-researched, optimized pieces on deadline. He combines editorial rigor with keyword strategy to boost traffic, authority, and reader retention across blogs, platforms, and newsletters.
পাওলো স্যাভেরিনিরি বিধবা স্ত্রী একাকিনী তার পুত্রকে নিয়ে একটা সামান্য ছোট বাড়িতে থাকত। বাড়িটি ছিল বনিফেসিও দুর্গের প্রাচীরের ওপর। শহরটা পাহাড়ের ধারে পাথরের তৈরি।
সেখান থেকে সমুদ্র দেখা যায়। সমুদ্র থেকে তাকালে মনে হবে, বাড়িগুলো যেন পাহাড়ের গা থেকে ঝুলানো। সার্ডিনিয়ার একেবারে নিন্মংশে- শহরটা পাহাড়ে কণ্টকিত গিরিপথের মধ্যে অবস্থিত। বিপরীত দিকে সমুদ্রের ওপাড়টা পাহাড়ের ধার কাটা একটা বারান্দার মতো- এটাই বন্দর। অনেকদূর ঘুরে তবে প্রথম বাড়িতে যাওয়া যায়। ছোট ছোট ইতালীয় আর সার্ডিনীয় মেছো নৌকো এখানে দেখা যায়। সপ্তাহে দুবার পুরোনো একটা স্টিমার যাতায়াত করে, এখন আর আজাসসিও-র মধ্যে।
পাহাড়ের ওপরকার বাড়িগুলো শাদা। মনে হয় যেন, বুনো সামুদ্রিক পাখির বাসা পাহাড়ের সঙ্গে আটকে রাখা হয়েছে- নিচে ভয়ংকর উত্তাল সমুদ্র, যাতে জাহাজ ভয়ে ভয়ে পাড়ি জমায়। ঝড় কেবলি সমুদ্রকে উত্তাল করে দিয়ে যাচ্ছে, -বিরাম নেই, বিশ্রাম নেই। ঝাড়ের দাপটে তটের ঘাসগুলোকে মনে হয় কে যেন খুবলে খেয়ে নিয়েছে- প্রচণ্ড বেড়ে ঝড় বয়ে গিরিপথকে গাছপালা শূন্য করে রেখেছে। পাহাড়ের অনন্ত শ্রেণীর মধ্যে-মধ্যে কালো-কালো অংশে সমুদ্রের শাদা ফেনা জমে ঝড়ে নড়ছে চড়ছে- মনে হয় তারা জলের ওপর স্পন্দিত হচ্ছে।
পাহাড়ের চুড়োর কাছে আটকানো বিধবা স্যাভেরিনির বাড়িটার তিনটি জানলা। সেই জানলা খুললে দেখা যায় নির্জন শূন্য আকাশ খাঁ খাঁ করছে।
সে একাকিনী সেখানে বাস করত। সে, তার একমাত্র ছেলে আন্তোয়েন আর একটা বিরাট গোছের কুকুর নিয়ে ছিল তার সংসার। কুকুরটা লম্বা আর রোগা- গাময় ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া লোম। মেষপাল পাহাড়া-দেওয়া জাতের কুকুর। এই কুকুর নিয়ে আন্তোয়েন শিকারে যেত। একদিন সন্ধ্যায় এক ঝগড়া ও বচসার পরিণামে নিকোলাস র্যাভোলাটি নামে একজন লোক তাকে ছুরি মেরে হত্যা করে রাতারাতি সার্ডিনিয়ায় পালিয়ে যায়।
পথচারীরা মৃতদেহ তার কাছে এনে দিল। বৃদ্ধা যখন ছেলের মৃতদেহ পেল, তখন সে একটুও কাঁদল না, অনেক্ষণ স্থির হয়ে বসে রইল মৃত ছেলের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। তারপর তার শিরওঠা কুঞ্চিত হাত তার দিকে বাড়িয়ে সে প্রতিহিংসা নেবার শপথ নিল। সে কাউকে ডাকল না, একা কুকুরটাকে নিয়ে দোর বন্ধ করে রইল।
কুকুরটা সারারাত গর্জন করে চলল। বিছানার ধারে বসে সে অবিরাম ডাকতে লাগল। সে তার মনিবের দিকে মাথা বাড়িয়ে লেজটা পেছনের দু-পায়ের খাঁজে ঢুকিয়ে ডাকতে লাগল। সে যেমন একভাবে বসে রইল, ছেলেটির মা-ও তেমনি কাঠের মূর্তির মতো স্থির হয়ে বসে রইল। তার মা ছেলের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে তাঁদতে লাগল- তার চোখ ফেটে বড় বড় অশ্রুবিন্দু ছেলের মৃতদেহের ওপর ঝরে পড়তে লাগল।
মনে হচ্ছিল, আন্তোয়ন যেন চিৎ হয়ে শুয়ে ঘুমুচ্ছে। গায়ে তার ধূসরবর্ণের কোট-সে কোটের বুকের কাছটা ছেঁড়া আর রক্তাক্ত। তার সর্বাঙ্গে রক্ত- তার শার্ট আর ওয়েস্ট-কোটে, প্যান্টে, মুখে, হাতে আর দাড়িতে রক্ত ডেলা বেঁধে জমে আছে। তার চুলেও রক্ত।
বুড়িমা তার উদ্দেশে কথা বলতে শুরু করল। তার কণ্ঠস্বর শুনে কুকুরটা চুপ করল।
‘শোনো, তোমার হত্যার প্রতিশোধ নেয়া হবে। খোকা আমার, খোকারে, আহা খোকা। ঘুমোও, শুনে রাখো তোমার হত্যার প্রতিশোধ আমি নেবই। তোমার মা প্রতিজ্ঞা করছে। তোমার মায়ের কথা আর কাজে পার্থক্য হবে না।’
ধীরে ধীরে সে তার সন্তানের দেহের ওপর ঝুঁকে পড়ল। তার ঠাণ্ডা ঠোঁটের ওপর আবেগে নিজের মুখ স্পর্শ করল। কুকুরটা গোঙাতে লাগল। তার সে দীর্ঘ কাতর কান্না শুনে বুকের মধ্যে কীরকম যেন করে-ভয় ধরে যায়।
এইভাবে সেই মৃতদেহের পাশে, সেই বৃদ্ধা আর তাদের কুকুর সেমিলান্তি সারারাত কাটিয়ে দিল।
পরদিন আন্তোয়েন স্যাভেরিনিকে কবর দেয়া হল।
কিছুদিন পর থেকেই বনিফেসিওয় কেউ আর তার কথা বলত না; সবাই তাকে ভুলে গেল। আন্তোয়েনের কোনো ভাই ছিল না, আত্মীয়স্বজন কেউ ছিল না। প্রতিশোধ নেবার মতো কেউই ছিল না। তার মা একাকিনীই প্রতিশোধ নেয়ার কথা ভাবত।
প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় গিরিপথের বিপরীত দিকে সে তীরের ওপর একটা শাদা জায়গা দেখত। এটা হচ্ছে, সার্ডিনিয়ার একটা ছোট গ্রাম- নাম লংগোসার্ডো। কর্সিকার ডাকাতদের যখন গ্রেফতার করার জন্য অনুসন্ধান করা হত, তখন তারা সবাই এখানে এসে আশ্রয় নিত। এইভাবে এই ছোট্ট গ্রামটি ডাকাতে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। তাদের দেশের বিপরীত কূলে বসে তারা আবার দেশে ফিরে আসবার সুযোগ খুঁজত। আন্তোয়েনের মা জানত যে, এই গ্রামেই নিকোলাস র্যাভোলাটি আশ্রয় নিয়েছে।
জানলার কাছে একাকিনী সারাদিন বসে বসে আন্তোয়েনের মা সেই গ্রামটা দেখত আর প্রতিহিংসার কথা ভাবত। অন্যের সাহায্য ছাড়া সে কী করে বদলা নেবে? সে বুড়ি হয়েছে, গায়ে আর শক্তি-সামর্থ্য নেই, নিজেই কবে মরে যাবে! কিন্তু সে যে প্রতিজ্ঞা করেছে- ছেলের মৃতদেহ ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করেছে! এ-কথা সে ভুলবে কী করে? তার তো আর দেরি করা চলে না! কিন্তু কোন্ উপায়ে সে এই অসাধ্য সাধন করবে? রাত্রে সে ঘুমোতে পারে না, তার স্বস্তি নেই, সুখ নেই, একগুঁয়ের মতো সে চিন্তা করতে লাগল। কুকুরটা তার পায়ের কাছে ঘুমুত আর থেকে-থেকে মাথা তুলে ডেকে উঠত- যেন তার মনিব তাকে ডাকছে, যেন তার পাশব আত্মায় তার মৃত মনিবের স্মৃতি জেগে উঠছে- সে স্মৃতি কিছুতেই মুছে যাবে না!
একদিন রাত্রে সেমিলান্তি এইভাবে ডাকছে, হঠাৎ আন্তোয়েনের মায়ের মাথায় একটা মতলব এল- সে মতলব বন্য, প্রতিহিংসাপরায়ণ আর নৃশংস। সকাল পর্যন্ত এই নিয়ে সে ভাবল, তারপর ভোর না-হতেই উঠে গির্জায় চলে গেল। মেঝের ওপর সটার শুয়ে ভগবানের সাহায্য ভিক্ষে করল। তিনি যেন তাকে শক্তি দেন। সেই শক্তিতে সে যেন তার পুত্রের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে পারে।
তারপর সে বাড়ি ফিরে এল। তার উঠোনে একটা পুরনো তেলের খালি পিঁপে ছিল। তার ঢাকনাটা খোলা। ছাদ থেকে নল বেয়ে জল এসে সেটাতে পড়ত। সে সেটাকে খালি করে মাটিতে শুইয়ে পাশে কয়েকটা পাথরের চাঁই আর লাঠি পুঁতে সেটা যাতে নড়বড় না করে, এমনি করে ফেলল। তারপর সেমিলান্তিকে চেন দিয়ে এর মধ্যে বেঁধে বাড়ির মধ্যে ঢুকল।
এবার সে ঘরের মধ্যে অস্থিরভাবে পায়চারি করতে লাগল। সে কেবলি সার্ডিনিয়ার তীরের দিকে তাকাত আর ভাবত আততায়ী নিশ্চয়ই ওই ওখানেই আছে।
সারাদিন, সারারাত কুকুরটা ডাকত। সকালে একটা ভাঁড়ে করে বুড়ি তাকে জল দিয়ে আসত। কিন্তু, তা ছাড়া- আর কিছু না- ঝোল নয়, রুটি নয়, কিছুই নয়।
দিন কেটে যেত। খাদ্যাভাবে সেমিলান্তি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ত আর ঘুমুত। তার পরের দিন তার চোখের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ হয়ে উঠত- গায়ের লোম খাড়া হয়ে উঠত, সে মরিয়ার মতো চেন ধরে টানতে থাকত।
তবুও বুড়ি তাকে কিছু খেতে দিত না। জন্তুটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠল, ভাঙা গলায় ডাকতে লাগল। এইভাবে রাত কেটে গেল। তারপর ভোর হলে বুড়ি এক পড়শীর বাড়ি গিয়ে দু-আঁটি খড় ভিক্ষে করে নিয়ে এল। তার মৃত স্বামীর পুরনো জামাকাপড় সে বার করে নিয়ে এল। সেই জামার মধ্যে খঢ় ভরে সেটাকে মানুষের মতো দেখতে এক মূর্তিতে রুপান্তরিত করল।
সেমিলান্তির আশ্রয়স্থলের কাছে একটা খুঁটি মাটিতে পুঁতে, সেই খুঁটিতে সেই খড়ের তৈরি মানুষটিকে সে বেঁধে দিল। তারপর পুরনো কাপড়ের একটা পুঁটলি বেঁধে পুতুলটার মাথা বানিয়ে ফেলল।
কুকুরটা আশ্চর্য হয়ে হয়ে সেই খড়ের মানুষটাকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে লাগল। ক্ষুধায় কাতর হলেও, সে চুপ করে রইল।
তারপর বুড়ি মাংসের দোকানে গেল এবং একটা বড় মাংসের পিণ্ড কিনে এনে বাড়ি ফিরে এল। উঠোনে কাঠ ধরিয়ে আগুন করে সেই মাংস রান্না করল। সেমিলান্তি লাফঝাঁপ দিতে লাগল। তার মুখ দিয়ে বেরুতে লাগল ফেনা, দৃষ্টি তার নিবদ্ধ মাংসের দিকে- মাংসের গন্ধ আর ধোঁয়া তার পেটে ঢুকতে লাগল।
পরে বুড়ি সেই গরম ধোঁয়া- উঠা রান্না-করা মাংসের পিণ্ড খড়ের মূর্তিটার গলায় বেশ করে জড়িয়ে দিলে। তারপর সে সেমিলান্তির চেন খুলে দিল।
এক বিরাট লাফ দিয়ে সেমিলান্তি সেই খড়ের পুতুলের গলার দিকে ছুটল। তারপর পা দিয়ে তার গলা চেপে ধরে, দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে লাগল। তারপর বারবার লাফিয়ে পড়ে তার গলায় ঝোলানো মাংস ছিঁড়ে ছিঁড়ে গোগ্রাসে খেতে লাগল।
বুড়ির চোখদুটো জ্বলে উঠল-সে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে সমস্ত ব্যাপার লক্ষ করতে লাগল। সে আবার কুকুরটা চেন দিয়ে বেঁধে দুদিন উপবাসে রাখল। তারপর আবার এই ব্যাপার করল।
তিনমাস ধরে বুড়ি কুকুরটাকে এইভাবে অভ্যস্ত করাল। কী করে থাবা দিয়ে ধরে দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে হয়, তা কুকুরটার বেশ রপ্ত হয়ে গেল। এখন সে আর কুকুরটাকে চেন দিয়ে বাঁধে না।
সে চোখের ইঙ্গিত করলেই কুকুরটা সেই খড়ের মূর্তিকে আক্রমণ করে।
সে কুকুরটাকে এমন শিক্ষা দিল যে, খড়ের মূর্তির গলায় কোনো মাংস না-থাকলেও সে তাকে আক্রমণ করে তার টুঁটি ছিঁড়ে ফেলত। পরে অবশ্য সে কুকুরের জন্যে মাংস রেঁধে তাকে খাওয়াত।
খড়ের মূর্তিটা দেখলেই সেমিলান্তি গর্জন করত আর তার মনিব-গিন্নির দিকে তাকাত। সে ‘যাও’ বলে শিস দিয়ে আঙুল তুললে সে ছুটে দিয়ে তাকে আক্রমণ করত।
উপযুক্ত সময় সময় এসেছে বুঝে বুড়ি স্যাভেরিনি একদিন ভক্তিপ্লুত হৃদয়ে গির্জায় গেল। তারপর পুরুষের পোশাক পরে খুব দুর্বল বৃদ্ধ লোক সেজে সার্ডিনিয়ার এক জেলেকে সঙ্গে করে তার কুকুরটা নিয়ে গিরিপথের ওধারে গেল।
একটা কাপড়ের থলিতে সে একটা বিরাট মাংসের পিঠে সঙ্গে নিল। দুদিন ধরে সেমিলান্তিকে উপোসী রাখা হয়েছিল। কিছুক্ষণ অন্তর অন্তর বুড়ি তাকে পিঠের গন্ধ শুঁকিয়ে উত্তেজিত করছিল।
তারা লংগোসার্ডো গ্রামে ঢুকল। কর্সিকানটা একটা মদের দোকানে গেল। বুড়ি একটা রুটিঅলার দোকানে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করল, নিকোলাস র্যাভেলাটি কোথায় থাকে। সে এখন তার পুরনো ছুতোরের ব্যবসা ধরেছে। দোকানের ভেতরে বসে সে কাজ করছিল।
বুড়ি দরজা খুলে ডাকল. ‘এই নিকোলাস!’
সে ফিরে তাকাল। তখন কুকুরটাকে ছেড়ে দিয়ে বুড়ি আদেশ করল, ‘যা, যা, ওকে ছিঁড়ে খা- ছিঁড়ে খা।’
কুকুরটা উত্তেজিত হয়ে লোকটার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল আর তার টুঁটি কামড়ে ধরল। লোকটা হাত বাড়িয়ে কুকুরটাকে ছাড়াবার চেষ্টা করতে লাগল আর মাটিতে গড়াগড়ি লাগল। কিছুক্ষণ সে মাটিতে কুঁকড়ি মেরে হাত-পা ছুঁড়তে লাগল, তারপর সে ঠাণ্ডা হয়ে গেল। কিন্তু সেমিলান্তি ততক্ষণে তার টুঁটি কামড়ে ছিঁড়েখুঁড়ে একাকার করে ফেলেছে।
দুটি পড়শী তাদের বাড়ির দোরে বসেছিল। তাদের বেশ স্মরণ হয় যে, একজন বুড়ো দোকান থেকে বেরিয়ে এল। তার সঙ্গে একটা কালো কুকুর। তার মনিব তাকে কালো একটা কী দিল, সে সেটা খেতে-খেতে চলে গেল। সে রাতে বুড়ি তার বাড়িতে ফিরে এল। অনেকদিন পরে সে-রাতে সে নিশ্চিন্তে ঘুমুল।
আরও পড়ুন- শিল্পী নাজনীন এর গল্প- স্মৃতিভ্রষ্ট পরিব্রাজক

Mostafizur Rahman is a professional content writer at CrawlText, specializing in SEO articles, blog posts, and web copy that drive engagement and conversions. With experience crafting clear, audience-focused content for almost all the niches, he delivers well-researched, optimized pieces on deadline. He combines editorial rigor with keyword strategy to boost traffic, authority, and reader retention across blogs, platforms, and newsletters.
