Mostafizur Rahman is a professional content writer at CrawlText, specializing in SEO articles, blog posts, and web copy that drive engagement and conversions. With experience crafting clear, audience-focused content for almost all the niches, he delivers well-researched, optimized pieces on deadline. He combines editorial rigor with keyword strategy to boost traffic, authority, and reader retention across blogs, platforms, and newsletters.
গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে জানা আমাদের দৈনন্দিন স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পুষ্টিকর সবজিটি ভিটামিন এ, বেটা-ক্যারোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ যা চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি, ত্বকের উজ্জ্বলতা ও রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
তবে অতিরিক্ত গাজর খাওয়া কিছু অপকারিতাও ডেকে আনতে পারে, যেমন হজমের সমস্যা বা ত্বকের রঙ পরিবর্তন। তাই গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন থেকে পরিমিত পরিমাণে খাওয়াই সর্বোত্তম।
গাজর খাওয়ার ১০টি উপকারিতা

গাজর এমন এক সবজি, যা খেতে যেমন মিষ্টি ও সুস্বাদু, তেমনি এতে রয়েছে অসাধারণ পুষ্টিগুণ। এটি শুধু সালাদ বা রান্নায় রঙ ও স্বাদ বাড়ায় না বরং শরীরের ভিতর থেকে শুরু করে বাহ্যিক সৌন্দর্য পর্যন্ত নানাভাবে উপকার করে।
প্রাচীনকাল থেকেই গাজরকে “স্বাস্থ্য রক্ষাকারী সবজি” বলা হয়। এতে রয়েছে ভিটামিন A, বিটা-ক্যারোটিন, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম, ভিটামিন K এবং আরও অনেক উপকারী উপাদান।
চলুন দেখে নেওয়া যাক প্রতিদিন গাজর খাওয়ার ১০টি উপকারিতা:
১. চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে

গাজরে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন থাকে, যা শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য একটি উপাদান।
এটি রাতকানা প্রতিরোধ করে এবং কর্নিয়া ও রেটিনার কার্যকারিতা ঠিক রাখে। যারা নিয়মিত গাজর খান, তাদের চোখের দৃষ্টি দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
বিশেষ করে যারা দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে কাজ করেন, তাদের চোখের ক্লান্তি ও শুষ্কতা কমাতে গাজর সহায়ক ভূমিকা রাখে।
২. ত্বককে করে উজ্জ্বল ও মসৃণ

গাজরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগায়। এতে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে, যা ত্বককে রাখে টানটান ও যৌবনদীপ্ত।
গাজর খেলে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। অনেকেই গাজরের জুস ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন সকালে পান করেন, যা প্রাকৃতিকভাবে গ্লো ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
৩. হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করে

গাজরে থাকা পটাশিয়াম ও ফাইবার হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
গাজরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি-র্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে ধমনীকে পরিষ্কার রাখে, ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস পায়। নিয়মিত গাজর খাওয়া হার্টের সামগ্রিক কার্যক্ষমতা উন্নত করে এবং রক্ত সঞ্চালনকে স্বাভাবিক রাখে।
৪. হজমশক্তি বাড়ায়

গাজরে থাকা প্রাকৃতিক আঁশ বা ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে। এটি অন্ত্রের গতি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। গাজর খেলে পেটের ভেতর সঠিক ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় থাকে, যা গাট হেলথের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ভারী খাবার খাওয়ার পর এক বাটি সালাদে কিছু কাঁচা গাজর থাকলে তা হজমে সাহায্য করে এবং পেট ফাঁপা বা গ্যাসের সমস্যা কমায়।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
গাজর হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সমৃদ্ধ সবজি। এতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন এ ও সি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গাজরের পুষ্টিগুণ দেহকে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়।
বিশেষ করে শীতকালে যখন ঠান্ডা-কাশি বা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে, তখন গাজর খেলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা দৃঢ় থাকে এবং সহজে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৬. দাঁত ও মুখগহ্বরের যত্নে সহায়ক
গাজর চিবানোর সময় মুখে লালারস নিঃসরণ বেড়ে যায়, যা মুখের অম্লতা কমিয়ে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। এটি প্রাকৃতিকভাবে দাঁত পরিষ্কার রাখে ও মাড়ি শক্ত করে।
গাজর দাঁতের এনামেল রক্ষা করে এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সহায়তা করে। তাই যারা প্রতিদিন একটুখানি কাঁচা গাজর চিবিয়ে খান, তাদের মুখগহ্বর থাকে সতেজ ও সুস্থ।
৭. শরীরের শক্তি ও রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে
গাজরে প্রচুর পরিমাণে লোহা, কপার ও ফলিক অ্যাসিড থাকে, যা রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। নিয়মিত গাজর খেলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, ফলে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়ার সমস্যা দূর হয়।
এছাড়া গাজরের প্রাকৃতিক শর্করা শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি দেয়, যা কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি বিশেষভাবে উপকারী তাদের জন্য, যারা দৈনন্দিন জীবনে ক্লান্তি বা দুর্বলতায় ভোগেন।
৮. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
গাজরে পাওয়া যায় ক্যারোটিনয়েড ও ফ্যালকারিনল নামক উপাদান, যা শরীরের কোষকে ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, গাজর খাওয়া স্তন, ফুসফুস ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে।
এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ শরীরের টক্সিন দূর করে কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
৯. ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যে উন্নতি আনে
গাজরের ভিটামিন এ ও ই ত্বক ও চুল উভয়ের জন্যই অত্যন্ত উপকারী। এটি মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, ফলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়া কমে যায়।
একই সঙ্গে গাজর ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখে। অনেক স্কিন কেয়ার ও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টেও গাজরের নির্যাস ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ও চুলে পুষ্টি জোগায়।
১০. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
গাজর কম ক্যালরিযুক্ত এবং ফাইবারে ভরপুর, যা দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। এটি অতিরিক্ত ক্ষুধা কমায় এবং অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে।
যারা ওজন কমাতে চান, তারা দৈনন্দিন ডায়েটে গাজর অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। গাজরের জুস বা সালাদ হালকা খাবার হিসেবে অত্যন্ত উপযুক্ত, যা শরীরে পুষ্টি যোগায় কিন্তু ক্যালরি বাড়ায় না।
গাজরের অপকারিতা: গাজরের ৬ টি ক্ষতিকর দিক
যেকোনো ভালো জিনিসের মতো গাজরও অতিরিক্ত খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, যদি নিয়মিত মাত্রাতিরিক্ত গাজর খাওয়া হয়, তবে তা শরীরের কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
নিচে গাজর খাওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ অপকারিতা বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো:
১. অতিরিক্ত বিটা-ক্যারোটিন শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে
গাজরে থাকা বিটা-ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা চোখ ও ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয়। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে গাজর খেলে শরীরে বিটা-ক্যারোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়, যার ফলে “ক্যারোটিনেমিয়া” নামক একটি অবস্থা দেখা দিতে পারে।
এতে ত্বক ও হাতের তালু হালকা হলুদ বা কমলা বর্ণ ধারণ করে। যদিও এটি সরাসরি প্রাণঘাতী নয়, তবুও এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে এবং যকৃৎ বা লিভারের উপর চাপ ফেলে।
২. হজমের সমস্যা ও পেট ফাঁপা সৃষ্টি করতে পারে
গাজরে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হজমে সহায়তা করে। কিন্তু অতিরিক্ত ফাইবার গ্রহণ করলে উল্টো প্রভাব দেখা দেয়। অনেক সময় গাজর বেশি খেলে পেট ফাঁপা, গ্যাস, বা ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দেয়।
বিশেষ করে যাদের হজমতন্ত্র দুর্বল বা যাদের আগে থেকেই ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রোম (IBS) আছে, তাদের ক্ষেত্রে গাজরের অতিরিক্ত ফাইবার হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই গাজর খাওয়া উচিত পরিমাণ মতো এবং অন্যান্য খাবারের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে।
৩. রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে
গাজরের স্বাদ মিষ্টি এবং এতে প্রাকৃতিকভাবে কিছু পরিমাণ চিনি থাকে। সাধারণত এই পরিমাণ ক্ষতিকর নয়, কিন্তু যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের জন্য অতিরিক্ত গাজর খাওয়া রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা সাময়িকভাবে বাড়িয়ে দিতে পারে।
রান্না করা গাজরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) তুলনামূলক বেশি, তাই ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গাজর খাওয়া এবং কাঁচা অবস্থায় সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করা।
৪. লিভারের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে
ভিটামিন এ একটি ফ্যাট-সোলিউবল ভিটামিন, অর্থাৎ এটি চর্বিতে দ্রবণীয় এবং শরীরে জমা হতে পারে। গাজর অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে বিটা-ক্যারোটিন লিভারে জমা হয়ে ভিটামিন এ-এর অতিরিক্ত মাত্রা তৈরি করতে পারে, যা “হাইপারভিটামিনোসিস এ” নামক অবস্থা সৃষ্টি করে।
এতে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে, মাথা ব্যথা, বমি ভাব, এমনকি ত্বক খসখসে হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
৫. অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে
যদিও গাজর সাধারণত নিরাপদ খাদ্য হিসেবে পরিচিত, তবুও কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এটি অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যাদের পরাগরেণু অ্যালার্জি (pollen allergy) রয়েছে, তাদের শরীরে গাজরের কিছু প্রোটিন অ্যালার্জি রিয়াকশন ঘটাতে পারে।
এর ফলে মুখ, গলা বা ঠোঁট চুলকানো, শ্বাসকষ্ট, ত্বকে র্যাশ বা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে গাজর খাওয়া অব্যাহত রাখলে সমস্যা আরও জটিল হতে পারে, তাই সতর্ক থাকা জরুরি।
৬. কিডনির সমস্যায় আক্রান্তদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে
গাজরে থাকা পটাশিয়াম ও অন্যান্য খনিজ উপাদান সাধারণত শরীরের জন্য উপকারী, কিন্তু কিডনি সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
কিডনি দুর্বল হলে অতিরিক্ত পটাশিয়াম রক্তে জমে হাইপারকালেমিয়া নামক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, যা হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা ব্যাহত করে। তাই যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে, তাদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গাজরের পরিমাণ না বাড়ানো।
গাজর খাওয়ার নিয়ম
গাজর এমন একটি সবজি যা প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায় এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে শুধু গাজর খাওয়াই যথেষ্ট নয়- সঠিকভাবে খাওয়া, পরিমাণ বজায় রাখা, কখন খাওয়া উচিত ও কীভাবে খেলে উপকার সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়- এসব জানা খুবই জরুরি।
নিচে ধাপে ধাপে আলোচনা করা হলো গাজর খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি:
১. কাঁচা গাজর খাওয়া
কাঁচা গাজর খাওয়া সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় উপায়। এতে ভিটামিন-সি ও বিটা-ক্যারোটিন অক্ষত থাকে, যা চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এবং ত্বক উজ্জ্বল করে। কাঁচা গাজর খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে, কারণ এর উপরে মাটির জীবাণু বা কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ থাকতে পারে।
অনেকে গাজর কুচি করে সালাদে পেঁয়াজ, শসা, টমেটোর সঙ্গে মিশিয়ে খান। এতে স্বাদও ভালো হয়, আবার শরীরেও শীতলতা আসে।
তবে যাদের হজমে সমস্যা বা গ্যাসের প্রবণতা আছে, তাদের কাঁচা গাজর বেশি পরিমাণে খাওয়া ঠিক নয়, দিনে ১টা মাঝারি আকারের গাজরই যথেষ্ট।
২. রান্না করে গাজর খাওয়া
গাজর সিদ্ধ বা হালকা ভাজা করে খেলে এর বিটা–ক্যারোটিন সহজে শরীরে শোষিত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, গাজর রান্না করলে কিছু ভিটামিন নষ্ট হলেও ক্যারোটিনয়েডের জৈবপ্রাপ্যতা (bioavailability) বাড়ে।
গাজর রান্না করার সময় অল্প তেল ব্যবহার করলে তেল চর্বি হিসেবে কাজ করে এবং ভিটামিন-এ শরীরে সহজে শোষিত হয়। তাই গাজরের সবজি বা ভাজি তৈরিতে সরিষা তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করা ভালো। তবে গাজর অতিরিক্ত সিদ্ধ করা ঠিক নয়, তাতে এর গঠন ও পুষ্টি দুই-ই নষ্ট হয়ে যায়।
৩. গাজরের রস (Carrot Juice)
গাজরের রস অনেক জনপ্রিয়, বিশেষত সকালের নাশতার সঙ্গে বা ব্যায়ামের পর পানীয় হিসেবে। এক কাপ গাজরের রস শরীরকে সতেজ রাখে এবং চোখের পুষ্টি জোগায়।
রস তৈরির সময় শুধু গাজর নয়, চাইলে আপেল, বিট, বা আদা যোগ করা যায়। এতে স্বাদ ও পুষ্টিগুণ দুইই বাড়ে। তবে রস বানানোর পরে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলা উচিত, কারণ অনেকক্ষণ রাখলে ভিটামিন-সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভেঙে যায়।
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য দিনে আধা কাপ গাজরের রসই যথেষ্ট- বেশি পরিমাণে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে।
৪. দুধের সঙ্গে গাজর খাওয়া
গাজরের হালুয়া বা গাজর-দুধের মিশ্রণ শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর। গরম দুধে সিদ্ধ করা গাজর হজমে সহজ হয় এবং শরীরে ভিটামিন-এ, প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের সমন্বয় ঘটায়।
শীতকালে গাজর-দুধের হালুয়া অনেক উপকারী, কারণ এটি শরীরে উষ্ণতা আনে এবং চামড়ার শুষ্কতা কমায়। তবে ডায়াবেটিক ব্যক্তিদের জন্য চিনি ছাড়া গাজর হালুয়া খাওয়াই উত্তম।
৫. গাজর ও তেল বা চর্বিযুক্ত খাবারের সংমিশ্রণ
গাজরের বিটা–ক্যারোটিন হলো ফ্যাট-সোলিউবল পুষ্টি উপাদান, অর্থাৎ এটি শরীরে শোষিত হতে কিছুটা চর্বি প্রয়োজন। তাই গাজর খাওয়ার সময় যদি সামান্য তেল বা বাদাম থাকে, তাহলে এর ভিটামিন-এ আরও ভালোভাবে শরীরে কাজ করতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, গাজর সালাদে একটু অলিভ অয়েল বা তিলের তেল দিলে শুধু স্বাদ নয়, পুষ্টিও বেড়ে যায়।
৬. কখন গাজর খাওয়া উচিত
গাজর খাওয়ার সেরা সময় হলো সকাল ও দুপুর। সকালে খেলে শরীর সারাদিন উজ্জীবিত থাকে এবং চোখের ক্লান্তি কমে। দুপুরে খাওয়া গাজর হজমে সাহায্য করে ও চামড়ার উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
রাতে অতিরিক্ত গাজর খাওয়া অনেকের ক্ষেত্রে গ্যাস বা পেট ফাঁপার সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই রাতে কাঁচা গাজর না খাওয়াই ভালো।
৭. প্রতিদিন কতটা গাজর খাওয়া নিরাপদ
সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দিনে ১–২টা মাঝারি আকারের গাজর যথেষ্ট। বেশি পরিমাণে খেলে শরীরে বিটা–ক্যারোটিন জমে গিয়ে ত্বকের রঙ কিছুটা হলুদে পরিণত হতে পারে, যাকে “Carotenemia” বলা হয়।
শরীরের ভিটামিন–এ-এর চাহিদা অনুযায়ী গাজর খাওয়া উচিত, কারণ অতিরিক্ত খেলে লিভারে চাপ পড়তে পারে।
৮. শিশুদের গাজর খাওয়ানোর নিয়ম
শিশুদের জন্য গাজর অত্যন্ত উপকারী, বিশেষত চোখের দৃষ্টি ও হাড়ের বৃদ্ধিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে ছোট বাচ্চাদের (১–৩ বছর) কাঁচা গাজর না দিয়ে সেদ্ধ বা নরম করে দিতে হবে, যাতে গিলতে ও হজম করতে সহজ হয়।
Frequently Asked Questions
রাতে গাজর খেলে কি হয়?
রাতে গাজর খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে যদি তা পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হয়। গাজরে থাকা বেটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে এবং চোখের ক্লান্তি কমায়। বিশেষ করে যারা দীর্ঘ সময় মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করেন, তাদের জন্য রাতে গাজর খাওয়া উপকারী। তবে খুব বেশি পরিমাণে খেলে হজমে সমস্যা, গ্যাস বা অম্লতা দেখা দিতে পারে। তাই রাতের খাবারের পর অল্প পরিমাণে গাজর সালাদ বা সেদ্ধ আকারে খাওয়া ভালো।
খালি পেটে গাজর খাওয়ার উপকারিতা কি?
খালি পেটে গাজর খেলে শরীরে ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয় এবং লিভারের কার্যক্ষমতা উন্নত হয়। এতে থাকা ফাইবার অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। সকালে খালি পেটে একটি বা দুটি কাঁচা গাজর খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ত্বক উজ্জ্বল হয় এবং সারাদিন সতেজ অনুভূত হয়। তবে যাদের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা আছে, তারা খালি পেটে কাঁচা গাজর না খেয়ে হালকা সেদ্ধ করে খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় গাজরের উপকারিতা কি?
গর্ভাবস্থায় গাজর খাওয়া মা ও শিশুর জন্য অত্যন্ত উপকারী। গাজরে থাকা ফলিক অ্যাসিড ও ভিটামিন এ শিশুর চোখ, হাড় এবং স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক বিকাশে সাহায্য করে। এছাড়া এতে থাকা ক্যালসিয়াম ও আয়রন গর্ভবতী মায়ের রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক। গাজর খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ হয়। তবে অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়, কারণ খুব বেশি ভিটামিন এ গ্রহণ ভ্রূণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
আরো পড়ুন– পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা

Mostafizur Rahman is a professional content writer at CrawlText, specializing in SEO articles, blog posts, and web copy that drive engagement and conversions. With experience crafting clear, audience-focused content for almost all the niches, he delivers well-researched, optimized pieces on deadline. He combines editorial rigor with keyword strategy to boost traffic, authority, and reader retention across blogs, platforms, and newsletters.
