সাদাত হোসাইন এর কাপলেট

Mostafizur Rahman
Mostafizur Rahman

Mostafizur Rahman is a professional content writer at CrawlText, specializing in SEO articles, blog posts, and web copy that drive engagement and conversions. With experience crafting clear, audience-focused content for almost all the niches, he delivers well-researched, optimized pieces on deadline. He combines editorial rigor with keyword strategy to boost traffic, authority, and reader retention across blogs, platforms, and newsletters.

১. রাতের আকাশ জানে, একাকী সে তারা, আঁধারেই খসে পড়ে, খসুক,

নির্ঘুম রাত জানে, চোখের পাতায় জমে, তোমাকে দেখার অসুখ।

 

২. যেতে হলে এখুনি যাও, পরে গেলে মায়া বেড়ে যাবে,

থেকে গেলে, এখুনি থাকো, বেলাশেষে ছায়া বেড়ে যাবে।

 

৩. এই যাত্রা ভীষণ মন্থর,

এই গৃহবাস বড় ক্লান্তির,

এই বেঁচে থাকাটুকু নিষ্প্রাণ,

যেন বুদবুদ সব ভ্রান্তির।

 

৪. এই যে ফেলে যাচ্ছি নদী, নদীর মতো নারী, ফেলে যাচ্ছি পুরনো সব পথ,

এই যে ফেলে যাচ্ছি আকাশ, আকাশজোড়া মেঘ, মেঘের ভেতর নক্ষত্রের রূপালী এক নথ!

 

৫. দুয়ারে দাঁড়ালে আড়ালে তাকায়, অবাক চোখ,

জেনেছে কে, কতটা সে, নীল চাতক।

 

৬. আনত বৃক্ষ এক-

কহিল তাকিয়ে দেখ,

ফল ভারে এই আছি নুয়ে।

আকাশে ঠেকিলে শির,

হয়োনাকো অস্থির,

পা জোড়া রয়েছে মাটি ছুঁয়ে।

 

৭. আমাদের দিন কাটে অন্যের লাভ-ক্ষতি গুনে,

আমাদের শেকড়টা খেয়ে যায়, পরশ্রীকাতরতার ঘুণে!

 

৮. বড় হতে হতে একা হয়ে যায় মানুষ, সুউচ্চ বৃক্ষ কিংবা দালানের মতো।

তারপর একদিন হঠাৎ মনে হয়, আসলে বড় হতে চায়নি সে অত!

 

৯. যা কিছু তোমার প্রিয়,

আমি ছাড়া তার বাকি সবটুকু

আমাকেই দিয়ে দিও।

 

১০. কতটুকু তার, পারো বহিবার, কতটুকু অসীম – অতল?

কতটুকু শোক, লুকায় দু চোখ, কতটুকু জল ছলছল!

 

১১. এই যে সন্ধ্যা, তারার আকাশ, রাত্রির রঙ জানে,

কাছের মানুষ দূরে সরে যায়, কী গোপন অভিমানে!

 

১২. চোখ মুছে দেখো ঘুচে গেছে সব নোনা জলে লেখা দাগ,

ভেঙে যাওয়া তুমি উঠে দাঁড়ালেই আঘাতেরা হতবাক!

 

১৩. উঠোন পেরোতে গুচ্ছ ফুলের বাগান, বাগান পেরোতে মৃত্যুর মালভূমি,

এইখানে আমি এসেছি মৃত্যু পেতে, আমায় পেতে কেন এসেছিলে তুমি?

 

১৪. আমিও তোমার নিন্দে ছড়াই, হঠাৎ করা ভুলের,

চুপ রয়ে যাই তখন, যখন সুবাস ছড়াও ফুলের।

 

১৫. তারপরও যদি, রক্তের নদী, লাশে ভাসে, ভাসুক,

মানুষের মন, মরেছে যখন, দিকে দিকে মৃত্যু আসুক!

 

১৬. শহর, নগর, জনপদ পাড়ি দিয়ে, এক বুকভার মেঘ ভীনদেশী পথ খোঁজে,

কিন্তু সকল আকাশেই জমা মেঘ, দুঃখ কী আর কাঁটাতার, দেশ বোঝে!

 

১৭. ডাকো নাই তবু ফিরে আসি বারবার,

দেখে নিও একদিন ফিরবো না আর!

 

১৮. ঝরে পড়া পাতা ডেকে পাখিটারে বলে,

পাখা আছে তবু তুমি আমাদেরই দলে!

 

১৯. যাকে তুমি ঠকিয়েছো, আসলেতো সেও ঠিক তোমাকে ঠকায়,

আয়নায় চেয়ে দেখো, তোমার বদলে ‘ঠগ’ চেহারা দেখায়!

 

২০. সিঁড়ি বলে, আর কতো উঠে গেলে মনে হবে, নামবার পথ নেই জানা?

লক্ষ্য আকাশ হোক, জেনে রেখো, মাটি তবু শেষের ঠিকানা!

 

২১. যা কিছু আমার ছিলো, লিখে দেই, তোমাকেই, জলের দামে,

তুমি ভাবো, জল বুঝি দামহীন।

আসলেতো জলের চেয়ে দামি কিছু নেই, অন্তবিহীন।

 

২২. নিভে যেতে যেতে যদি চমকাই,

চলে যেতে যেতে যদি থমকাই,

তবে জেনো,

রয়ে গেছো সবখানে তুমি এখনো।

 

২৩. হাত ছুঁয়ে দেই এসো বিশ্বাসটুকু, ভয় ভেঙে দেই এসো গুঞ্জনে,

চোখ বেঁধে দেই এসো নির্ভরতায়, ঠোঁট বেঁধে দেই চুম্বনে!

 

২৪. মনে রাখতে রাখতে ভুলেই গিয়েছি, ভুলেও যাওয়া যায়,

আজ ভুলে গিয়ে দেখি ফুলে ফুলে এ জীবন ছাওয়া যায়!

 

২৫. চোখ মুছে দেখো ঘুচে গেছে সব নোনা জলে লেখা দাগ,

ভেঙে যাওয়া তুমি উঠে দাঁড়ালেই আঘাতেরা হতবাক!

 

২৬. যতটুকু কাছে যাই, আসলে ততটুকু দূরে সরে আসি,

মানুষ মূলতঃ আজন্ম নিঃসঙ্গতার চাষি।

 

২৭. দুঃখের মতো গভীর করে পাই, হারাই হঠাৎ সুখের মতো দ্রুত,

জীবন জানে কার কতটুক পাওয়া, কার কতটুক কেবল পাওয়ার ছুঁতো!

 

২৮. আমার থাকুক হেরে যাবার সাহস, আমার থাকুক নত হবার ক্ষণ,

তোমার জয়েও আমার হাসি থাকুক, বুকে থাকুক মানুষ হবার মন।

 

২৯. যেতে হলে, এখুনি যাও, পরে গেলে মায়া বেড়ে যাবে,

থেকে গেলে, এখুনি থাকো, বেলাশেষে ছায়া বেড়ে যাবে।

 

৩০. এক হতে গিয়ে দুই হয়ে যাই, প্রেম ভেঙে গিয়ে শুরু দ্বৈরথ,

এক পথ ধরে হেঁটে যাবো ভেবে, দেখি দুজনার হয় দুইপথ।

 

সাদাত হোসাইন এর কাপলেট

 

৩১. একা আয়নায়, ভুল বায়নায়, মুখ দেখা যায়, দুঃখী দ্রষ্টার

তবু দিনমান, ভুলে অভিমান, হয় দেয়ালের, সুখী পোস্টার!

 

৩২. রোদের ভেতর ছায়া, নাকি ছায়ার ভেতর রোদ,

এক জীবনের সকল হিসেব, এমনই অদ্ভুত!

 

৩৩. এই যে জানালায়,

বৃষ্টি,

মানা যায়?

এই যে বুক,

অপেক্ষায়, বৃষ্টি আসুক!

তবু আসে না।

তুমিও-

তাই, বৃষ্টিতে ভেসে যায় শহর, তবু বুক ভাসে না।

 

৩৪. একটি ফুল ছিড়ে নিতেই অবশিষ্ট ফুলটি বললো, ভালো থেকো পাতা,

আক্ষেপের দীর্ঘজনম শেষে, অবশেষে পাতা পেলো সুখের বারতা!

 

৩৫. হাতের কাছে থাকা হাত, হারাই হঠাৎ, ধরতে গেলে নেই,

তবু কী বিশ্বাসে রোজ, করি খোঁজ, অপেক্ষায় আমি সে-ই!

 

৩৬. চলে যেতে যেতে আরেকবার তোমাকে দেখে নিলাম,

কী অদ্ভুত, ওই চোখে একদিন শুধু আমিই ছিলাম!

 

৩৭. কখনো কখনো থাকিনা কোথাও, নিজেকে নিয়ে নিরুদ্দেশ,

মন খারাপের কান্না লুকাই, ইচ্ছেগুলোর বিরুদ্ধে!

 

৩৮. মরা গাছে ডাল, ডালে জ্যাতা পাখি,

এভাবেই তাহারে, বুকে ধরে রাখি!

 

৩৯. মৃত্যু আসে রোজ-

আর এইখানে দেয়ালে দেয়ালে রেখে যায় প্রেম, ঘৃণা, ভালোবাসা, অভিশাপ।

তারপর একদিন, গোরস্তান হয়ে যাবে ফেসবুক, আইডিগুলো এপিটাফ!

 

৪০. আকাশের মতো মাঠের শরীরজুড়ে,

মানুষ বানায় কাছে থাকবার ঘর।

ঘরের জন্য দেয়াল যে দরকার,

দেয়াল বানায় মানুষে-মানুষ পর।

 

৪১. তোমাকে চেয়েছি অন্ধকারের মতন, একাকী ভীষণ, গভীর এবং গাঢ়,

তোমাকে চেয়েছি প্রার্থনা ও প্রেমে, যতটা রয়েছো তারচেয়ে বেশি আরও।

 

৪২. দেখা নেই-

তার মানে নয়,

স্মৃতি লেখা নেই!

শোনা নেই-

তার মানে নয়,

দিন গোনা নেই!

কথা নেই-

তার মানে নয়,

ব্যাকুলতা নেই!

 

৪৩. এই যে আমার দূরে থাকতে ভাল্লাগে না,

তবুও থাকি তেরো নদীর ওপার,

লুকিয়ে বুকে সাত সমুদ্র ঠিকই

বয়ে আনে সুবাসটুকু তোমার!

 

৪৪. কোথাও একটা পোস্টবক্স নেই, অথচ বুকের ভেতর চিঠি জমে জমে মেঘের মিনার,

কোথাও একটা ঠিকানা নেই, অথচ নীল খাম জমে জমে, ভেসে যায় বুকের কিনার।

 

৪৫. তোমার করতলে ভোর, তোমার শরীর জুড়ে ঘোর,

নেশায় মাতাল হলে জানি, তুমি মানে অথৈ আদর!

 

৪৬. মানুষ কি আর তেষ্টা বুকের চাতক হতে চায়?

তবুও তার একটা জীবন কাটে অপেক্ষায়!

 

৪৭. একটা মানুষ একলা রাতের বৃষ্টি ভেজা একলা কাক,

কেউ দেখেনা জানলা খুলে, তার কতটা মন খারাপ!

 

৪৮. কোথাও রাত নামে, বিষাদ খামে, কোথাও আলোর বান,

কোথাও ঠোঁট জানে, কী অভিমানে, ভালো থাকার ভান!

 

৪৯. যাচ্ছো যাবে, চোখের আড়াল, দেয়াল তুলে উধাও হও,

থাকার কথা, থাকছি আমি, জানছি তুমি ‘আমি’ নও।

 

৫০. জানে যদি কেউ, কতটুকু ঢেউ,

তোমাকে ডোবায়,

দীঘিটির জলও, হয়ে টলোমলো,

খোঁজে সে উপায়!

 

৫১. ‘মন কেমনে’র সূত্র সকল ছুড়ে,

ছুটছি যখন অনেক অনেক দূরে,

ঠিক তখুনি মেঘের মতো কিছু,

আলগোছে নেয় পিছু!

 

৫২. কাছে গেলে মনে হয়, এতো কাছে যেতে নেই,

কিছুটা দূরত্বই ভালো,

অথচ, কাছে যাবো যাবো করেই রাত্রি পোহালো!

 

৫৩. চলে গেলেইতো শেষ, শেষ করতে কার বা ভালো লাগে?

থেকে গেলে বরং

চোখের ভেতর মন দেখতে, মনের আলো লাগে।

 

৫৪. একদিন তার নাম ভুলে যাবো, চুলে ভাসা চেনা গন্ধও,

প্ল্যাটফর্ম জানে সময়ের ট্রেন, সময় ফুরালে অন্ধও।

 

৫৫. গল্প এখনো আগের মতোই, কিছুই হয়নি শোধ,

আমার এখানে বৃষ্টি এখনো, তোমার ওখানে রোদ।

 

৫৬. এই যে লোকে লোকারণ্য শহর, সকাল – সন্ধ্যা ভিড়ভাট্টা জাগে,

তবুও এমন একলা লাগার মানে, ‘নিজের একটা মানুষ’ সবার লাগে!

 

৫৭. ওর স্বাদ, এর স্বাদ, মিলে মিশে এরশাদ,

গালি দেয়া আমরাও, তারই মতো ফের স্বাদ!

 

৫৮. যে আমারে মনে রাখে নাই, তারে রাখি মনে,

কেউ কেউ প্রতিশোধ নেয়, এভাবে গোপনে!

 

৫৯. এই বেলা, অবহেলা করে নাও,

ওই বেলা আমি যদি না থাকি?

যদি ‘আমি’ ভুল করে ‘তুমি’ হই,

দুঃখ দিতে, ভুল পথে পা রাখি!

 

৬০. শরীরটা খুনে শেষ, ঘুণে শেষ ভেতর,

সারি সারি লাশ হাঁটে, কে কার? কে তোর?

 

সাদাত হোসাইন এর কাপলেট

 

৬১. দেখে লাশ, হা হুতাশ- করারাও জানিও,

এই খুনে, নিজ গুনে, দায়ী তুমি-আমিও!

 

৬২. আমি একদিন নিখোঁজ হবো, উধাও হবো রাত প্রহরে,

সড়কবাতির আবছা আলোয়, খুঁজবে না কেউ এই শহরে।

ভাববে না কেউ, কাঁপবে না কেউ, কাঁদবে না কেউ একলা একা,

এই শহরের দেয়ালগুলোয়, প্রেমহীনতার গল্প লেখা।

 

৬৩. শত কোলাহল, ক্ষত-নোনাজল, মুছতে জানে না,

ভিড়ের মানুষ, একাকী ফানুস, খুঁজতে জানে না।

 

৬৪. দিকে দিকে ফিকে হয় তুমিহীন দিন,

ঝরে পড়া পাতা তবু বেদনাবিহীন।

একটা শালিক একা দেয়ালের ফাঁকে,

তৃষিত দু’চোখ জুড়ে ব্যথা জমা রাখে।

আমিতো শালিক নই, পাতাটির মতো,

ঝরে গেছি সেই কবে, লুকিয়ে ক্ষত!

 

৬৫. জল জমে থাকা কাঁচে

জ্বর হয়ে থাকা আঁচে,

তুমিও থাকো অসুখের মতো

কী ভীষণ ছোঁয়াচে!

 

৬৬. কোথায় যাবে, তোমার মানুষ রেখে?

মানুষ কেন হারিয়ে গেলে শেষে,

মানুষ পাওয়া শেখে?

 

৬৭. মেঘের মতো ভার হয়ে রয় বুক,

মেঘের মত থমথমে কী ব্যথা!

মেঘতো তবু বৃষ্টি হয়ে ঝরে,

আমার কেবল জমেছে আকুলতা৷

 

৬৮. অন্ধকারে অন্ধ সবাই, বন্ধ ঘরে বন্ধ দম,

মুক্তি ছেড়ে যুক্তি খোঁজে, কার চেয়ে কে অন্ধ কম!

 

৬৯. চোখ বন্ধক রেখে অন্ধ মানুষও ভাবে,

যত দ্বন্দ্ব, পথ বন্ধ, আলোর অভাবে!

 

৭০. বাড়ে দাম, অবিরাম, রোজ রোজ পণ্যে,

এ সবটাই, শুধু ভাই, মানুষের জন্যে।

তবে আর, চিন্তার, কিচ্ছুটি বাকী নেই,

প্যাডে ভ্যাট, গ্যাসে ভ্যাট, কোত্থাও ফাঁকি নেই।

তবু বাড়ে, চুপিসারে, শরীরের ঘামটা,

কমে যায়, শুধু হায়, মানুষের দামটা।

 

৭১. জানি দুজনার পথ ভিন্ন,

তবু ফেলে যাই পদ চিহ্ন,

যদি পদরেখা কভু পথরেখা হয়ে

ঠিকানা করে অভিন্ন!

 

৭২. আমি যত দূরে যাই, ততটা পেছাই, তোমারই কাছে,

তুমি কতটা জানো, যা হয়নি জানানো, বুকে জমে আছে!

 

৭৩. আমি যত দূরে যাই, ততটা পেছাই,

তোমারই কাছে,

তুমি কতটা জানো, যা হয়নি জানানো,

বুকে জমে আছে!

 

৭৪. কেউ নেই, তবু মাঝরাত্তিরে একা ল্যাম্পপোস্ট জাগে- ‘যদি কেউ আসে’,

সে জেগে আছে, এই বিশ্বাসে!

 

৭৫. তোমায় দিলাম অযুত জারুল ফুল, তোমায় দিলাম হিজল ফুলের বন,

রোজ নিশিথে একলা থাকার কালে, আমায় দিও খানিক তোমার মন।

 

৭৬. যেতে যেতেও ফিরে আসবার বাহানা কুড়াই,

স্মৃতি-গন্ধা, অচেনা সন্ধ্যা, তোমাতে উড়াই।

 

৭৭. এই হাওয়ায় কান পেতে শোন,

তোকে মনে পড়ছে ভীষণ!

 

৭৮. অগোচরে ছিঁড়ে যায় রোজ শত সুতো,

তবু থাকা অভ্যাসে, মায়াটাই ছুতো।

 

৭৯. এমন বিষণ্ণ দিন শেষে

যদি খানিক আঁধার এসে,

ভীষণ আপন হয়ে বসে

তোমার আঙুলগুলোর ফাঁকে?

 

৮০ তখন আমার আঙুল ছাড়া

তুমি খুঁজবে কোথায় কাকে?

 

৮১. যতটুকু দেখো, ততটুকু আছি ভালো,

কে দেখে বুকের ভেতর, কতটা অগোছালো!

 

৮২. যতদূর চোখ যায়, যতদূর যায় না,

সবখানে অদ্ভুত, তুমিময় আয়না!

 

৮৩. একদিন বলে দেবো, কোথাও যাবো না আর,

ছেড়ে যাক শেষ ট্রেনও, দূরের দেশে আবার।

তার চোখও কারো হোক, কাজলের রেখাটুক,

এইখানে থেকে যাক, ‘প্রিয় ভুল’ শেখাটুক।

 

৮৪. তুমি আসমান হইয়া ঝড় বহাইলা, নদী হইয়া বান,

আমার এক জনমে দুঃখ জমা আসমানও সমান।

 

৮৫. এই যে হাঁটছি, হাঁটতে হাঁটতে পেরিয়ে যাচ্ছি আলোকবর্ষ পথ।

পেরিয়ে যাচ্ছি মাঠের পরে মাঠ, নদীর ওপার পাহাড়চূড়ার সারি।

ওইখানে এক ঘর থাকবে ভেবে, আর ক’ কদম হাঁটি।

পৌঁছে দেখি পথ থামেনা কোথাও, পথের অনেক বাকি।

 

৮৬. তোর জন্য কান্না পাচ্ছে খুব, তোর জন্য কান্না চেপে রাখা

আমার অশ্রু ভাসায় যদি তোকে, তাইতো এমন কান্না চেপে থাকা

 

৮৭. চোখ মুছে দেখো ঘুচে গেছে সব নোনা জলে লেখা দাগ,

ভেঙে যাওয়া তুমি উঠে দাঁড়ালেই আঘাতেরা হতবাক!

 

৮৮. এই যে ‘ফিরবো না’ বলে তুলছি আগল দরজা জুড়ে,

এই যে হিসেব কষছি লাভ ও ক্ষতির খরচা জুড়ে।

এই যে ঘোর আঁধারেও একলা থাকার করছি পণ,

জানলো কি কেউ,

বুকের ভেতর তবুও কাঁপে ‘অপেক্ষা’দের বিজ্ঞাপন!

 

৮৯. আসমানে উইঠাছে চান,সেই চান তোমারও লাহান,

চানের ওই মুখ চৌক্ষে দেইখ্যা,মন হইলো আনচান।

 

৯০. কিছুটা মেঘের মতো ছায়া যদি নামে,

কিছুটা বিষাদ আসে সন্ধ্যার খামে,

সকালের মিহি রোদ, রাত হয়ে যায়,

জেনে নিও, খুঁজে আর পাবেনা আমায়।

 

সাদাত হোসাইন এর কাপলেট

 

৯১. তোমার নামে সন্ধ্যা নামা শহর জানে,

রোজ কতটা আঁধার জমাই অভিমানে !

রোজ কতটা কান্না জমাই বুকের কোণে,

তোমার নামে রাত্রি গভীর শহর জানে।

 

৯২. তাড়িয়ে দিয়ো আমায়, নিশুতিরাতের তারা,

তাড়িয়ে দিও আকাশ, তাড়িয়ে দিও মেঘ,

আমারও খুব পা বাড়িয়ে, হারিয়ে যাবার তাড়া।

রাত্রি বলেই অন্ধকারে, আমার ভীষণ ভয়,

যদি ভুলে যাওয়া স্মৃতির সাথে হঠাৎ দেখা হয়,

মানুষ জানে, বাড়লে রাত্রি, মানুষ একা হয়!

 

৯৩. চারটা দেয়ালই এগিয়ে আসছে কাছে,

এগিয়ে আসছে ছাদের পরেও ছাদ,

এ ধূসর দিনে ক্লান্ত হৃদয় জানে,

এটুকুই সংবাদ!

 

৯৪. তোমাতেই বাঁচি, জলে ভাসি-হাসি, তোমাতেই ভালোবাসি,

তোমাতেই দিন, জনমের ঋণ, তোমাতেই ফিরে আসি।

তোমাতেই ভাবি, তোমাতেই কাঁপি, তোমাতেই শুরু শেষ,

এ হৃদয় জানে, প্রার্থনা মানে, আমার বাংলাদেশ!

 

৯৫. চোখে জমেছে শোক, শোকে জমছে ধুলো,

কবরে কবরে অচ্ছ্যুৎ লাশ, এপিটাফ নেই; ফুলও।

বুকে জমছে পাথর, পাথরে জলের ধারা,

নিকটবর্তী মানুষ ক্রমশঃ দূরবর্তী তারা।

 

৯৬. এমন বিষণ্ণ দিন শেষে

যদি খানিক আঁধার এসে,

ভীষণ আপন হয়ে বসে

তোমার আঙুলগুলোর ফাঁকে?

তখন আমার আঙুল ছাড়া

তুমি খুঁজবে কোথায় কাকে?

 

৯৭. সে এসে বসুক পাশে,

যেভাবে অসুখ আসে,

তারপর হয়ে যাক, যন্ত্রণা অনায়াসে।

তবুও আসুক সে,

জানুক, প্রিয়তম অসুখ সে

 

৯৮. সুতোখানি ছিঁড়ে গেলে দেখি, জুড়ে দেয়া কতখানি ভার!

কাছের মানুষ গেলে দূরে, কতখানি ফিরবে আবার?

 

৯৯. হঠাৎ কান্না পেয়ে গেলে, জল-চোখ আড়ালে শুকাই,

বুকে তবু জমে থাকো তুমি, তোমাকে কী করে যে লুকাই!

 

১০০. শেষ ট্রেনও চলে যায়? যাক।

কারো কারো তাড়া নেই, আধুলিও ভাড়া নেই,

কোথাও যাবোনা দেখে, একা থাকা প্ল্যাটফর্ম, ভীষণ অবাক!

*সোর্স- ফেসবুক

কবি পরিচিতি: সাদাত হোসাইন। মাদারীপুর জেলায় ২১ মে ১৯৮৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। সাদাত হোসাইন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। হুমায়ুন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার এবং কালি ও কলম পুরস্কারসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার লাভ করেছেন। তিনি বাংলাদেশে একজন বেস্টসেলার লেখক। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলো হলো- আমার আর কোথাও যাওয়ার নেই, আরশিনগর, অন্দরমহল, মানবজনম, ইতি স্মৃতিগন্ধা, প্রিয়তম অসুখ সে, জানালার ওপাশে, তোমার নামে সন্ধ্যা নামে ইত্যাদি।

 

আরও পড়ুন- শ্রীজাত এর  কাপলেট

Mostafizur Rahman
Mostafizur Rahman

Mostafizur Rahman is a professional content writer at CrawlText, specializing in SEO articles, blog posts, and web copy that drive engagement and conversions. With experience crafting clear, audience-focused content for almost all the niches, he delivers well-researched, optimized pieces on deadline. He combines editorial rigor with keyword strategy to boost traffic, authority, and reader retention across blogs, platforms, and newsletters.

Scroll to Top